গতবছর পার্লারে গিয়েছিলাম হেয়ার ট্রিটমেন্ট নিতে। অনেককেই বলতে শুনি অন্তত কিছু ট্রিটমেন্ট করানো উচিত হেলদি হেয়ারের জন্য। পার্লারে যাওয়ার পর তারা আমার চুলের লেন্থ দেখে প্রথমেই ভালো একটা এমাউন্ট চেয়ে বসলেন যদিও তখনকার আমার চুলের লেন্থ আরো কম ছিলো, তাদের কাছ থেকে ট্রিটমেন্ট নেয়ার পর খুব একটা ডিফারেন্স আমার চোখে পরে নাই, এছাড়া সবসময় করার মত এফোর্ডেবল ও মনে হয়নি। তারপর থেকে ডিসিশন নিয়েছিলাম যা পারি বাসায়ই ট্রিটমেন্ট করবো চুলের, ন্যাচারালি।
বলাই বাহুল্য চুল নিয়ে বিড়ম্বনার শেষ নেই, হোক শর্ট হেয়ার অর লং।সবচেয়ে বেশি প্রবলেম ফেস করছিলাম চুল পড়া নিয়ে আর আগা ফাটা নিয়ে। অর্গানিক প্রডাক্ট দিয়ে কেয়ার শুরু করার পর আলহামদুলিল্লাহ সলভ করতে পেরেছি অনেকটাই।
এবার আসি কি কি অর্গানিক প্রডাক্ট ইউজ করা যায় :
–স্ক্যাল্পের জন্য প্রথমেই আমাদের একটা তেল ইউজ করা উচিত সেটা তো সবারই জানা কথা। তবে আমি আসলে সবসময় ই অর্গানিক প্রডাক্টের উপর জোর দেই বেশি। নামীদামী ব্র্যান্ডের তেলের চেয়ে অর্গানিক কোকোনাট অয়েল প্রেফারেবল। রেগুলারলি কেয়ারিং এর জন্য এস্টেরিয়ার কোকোনাট অয়েল টা বেশ ভালো। চুলের যত্নে নারিকেল তেলের গুণাগুণ তো আমরা জানি এছাড়া চুলে কোনো অর্গানিক প্যাক লাগানোর আগেও তেল লাগানো উচিত তাহলে শ্যাম্পু করে প্যাকটা উঠানোর সময় চুল ঝরে কম।
–এখন একটা প্যাকের কথা বলি যেটা খুব সহজেই হাতের কাছে পাওয়া যায় এবং নানান গুনাগুনে ভরপুর, আমলকী। এস্টেরিয়ার স্টকেও আমলকীর গুঢ়া এভেলেইবল। আমলকী হেয়ার টনিক হিসেবে কাজ করে, এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা প্রাকৃতিকভাবে চুলে কন্ডিশনিং এর কাজ করে, তাছাড়াও চুলের গোড়া মজবুত করা, হেয়ার ফল কনট্রোল, ড্যানড্রাফ রিডিউসিং, হেয়ার শাইনিং এ আমলকীর ব্যবহার বেস্ট।
যে যে উপায়ে ইউজ করা যায় :
— কুসুম গরম পানিতে পরিমাণ মত আমলকীর গুঢ়া নিয়ে পেস্ট তেরী করে একঘন্টার মত রেখে দিতে হবে। একঘণ্টা পর স্ক্যাল্পে লাগিয়ে নিয়ে ৩০মিনিট অথবা একঘন্টা অপেক্ষা করে শ্যাম্পু করে ফেললেই হবে। যারা ঘরে বাইরের কাজে খুব বিজি সময় কাটান অনেক সময় নিয়ে নানান উপাদান দিয়ে প্যাক বানানোর সময় পান না তাদের জন্য এই প্যাকটা আসলে খুবই কার্যকরী। কম সময়ে কম শ্রমে ভালো একটা আউটপুট পাওয়া যায়।
–পেয়াজের রসের সাথেও কিন্তু আমলকীর পাউডার ইউজ করা যায় এই প্যাকটা হেয়ার ফল কন্ট্রোলে নিয়ে আসে। পেয়াজ ব্লেন্ড করে রস আলাদা করে নিয়ে তার সাথে আমলকীর পাউডার মিশিয়ে পেস্ট তৈরী করে নিয়ে স্ক্যাল্পে লাগাতে হবে।
—মেহেদি গুঢ়ার সাথে আমলকীর গুঢ়া হালকা গরম পানিতে মিক্স করে ব্যবহার করলে চুলের গোড়া মজবুত হয় এবং চুলে একটা শাইনি লুক নিয়ে আসে।
উপরে যে যে ব্যবহারের কথা বললাম সবগুলোই সহজে কম সময়ে এপ্লাই করা যায় এবং ভালো বেনেফিট দেয়। আমলকীর গুঢ়া ও এস্টেরিয়া পেইজে এভেলেইবল আছে সো সহজেই পেয়ে যাচ্ছেন ব্যবহারের জন্য। যেকোনো প্যাক বানানোর ক্ষেত্রে মিক্সচার তৈরী করে কিছুক্ষণ রেখে দেয়া ভালো তাহলে ইনগ্রেডিয়েন্টস গুলা প্রপারলি মিক্স হয়। তবে বেস্ট আউটপুট পাওয়ার জন্য অবশ্যই রেগুলারিটি মেইনটেইন করতে হবে। হোক সেটা প্রতি সপ্তাহে একদিন। এরপর চুলের ডিফারেন্স গুলা নিজেই বুঝতে পারবেন। তাহলে আজকের মত আমলকী সমাচার এখানেই শেষ করি।
লিখেছেন-