Mom & Baby

ক্লাস্টার ফিডিং- যেকথা প্রায় কেউ ই জানেনা!

ক্লাস্টার ফিডিং এর জন্য গুগল এ ছবি ঘেটে কোন বিদ্ধস্ত মায়ের ছবি পেলাম না। ছবির মায়ের কান্নাকান্না চেহারা দেখে এই ছবিটা নিলাম, আজকের টপিক এর সাথে কিছুটা রিলেভেন্ট বলে। ক্লাস্টার ফিড করাচ্ছে এমন মায়ের চুল হবে কারেন্ট এর শক লাগলে যেমন চুল দাড়ায়ে থাকে, ওরকম আর কান দিয়ে ধোয়া বের হচ্ছে, এরকম। এই জিনিস যার সাথে হয়নাই, তার নিজের বাদে আর কারো পক্ষে বোঝা সম্ভব না, কি অমানুষিক কষ্ট আর জিনি জানেন না, তার জন্য কত টেনশন এর ব্যপার।

বিকাল ৩টা/৪টা থেকে রাত ৯.৩০টা পর্যন্ত টানা ব্রেস্ট ফিডিং যে কি পরিমান এনার্জি ড্রেইনিং, সেটা লিখে বুঝানোর মত ক্ষমতা আমার নাই।

যদি আপনার বাবু অল্প সময়ের মধ্যে ঘন ঘন ব্রেস্টফিড করতে চায়। ফিডিং এর পর ও স্যটিস্ফাইড না হয়ে ইরিটেটেড হয়ে কান্না করা/ অস্থির হয়ে যেতে থাকে এবং ৪-৫ ঘন্টা পর্যন্ত এই অবস্থায় থাকে, এরকম ফিডিং কে ক্লাস্টার ফিডিং বলা যেতে পারে। এরকম অবস্থায় বাবুর মা নিজেই চিন্তায় পড়ে যান, মিল্ক-সাপ্লাই ঠিক মত হচ্ছে কিনা, বাবুর কোনো রকম অসুস্থতা বা সমস্যা হচ্ছে কিনা। ঘাবড়ে যাবার মতো এটি কোনো বিষয় তো না ই বরঞ্চ, এটা খুব স্বাভাবিক একটি ঘটনা।

কেন বাবু ক্লাস্টার ফিডিং করে?
প্রথম ৩-৬ সপ্তাহের বাবুদের মাঝে (আমার জন ৫ দিন বয়সেও করসিল) ক্লাস্টার ফিডিং এর প্রবণতা অনেক বেশি দেখা যায়। ঘন ঘন খাবার ইচ্ছা প্রকাশ করা খুবই পজিটিভ সাইন। বেশীরভাগ সময় বিকাল বা সন্ধ্যার দিকে বাবু ক্লাস্টার ফিড করতে পারে, এর একটা কারণ হতে পারে যে একটা লম্বা ঘুমের জন্য সে নিজেকে প্রস্তুত করছে।তবে মূল কারণটা হচ্ছে, ৬ মাসের মধ্যে নিউবর্ন বাবুরা অনেকগুলো ডেভেলাপমেন্ট মাইলস্টোন অতিক্রম করে। তার নিজের গ্রোথের প্রয়োজনেই সে একটু একটু পর খাওয়ার ইচ্ছা পোষন করে কান্না করা, ব্রেস্টের আশেপাশে মুখ নিয়ে যাওয়া, ঠোট গোল করে ফেলা বা অস্থিরতা প্রকাশ করবে। ঘন ঘন খেতে চাওয়ার মানে এটা না যে সে যথেষ্ট দুধ পাচ্ছেনা, বা যিনি ব্রেস্টফিড করাচ্ছেন তার নার্সিং এ কোনো সমস্যা। উল্টো ঘন ঘন ব্রেস্ট ফিড করালে মিল্ক-সাপ্লাই বেড়ে যাবার কথা।
এ সময়ে করণীয়
লম্বা সময় ধরে বাবুকে ব্রেস্টফিড করানো একজন মাকে ক্লান্ত করে ফেলতে পারে। এজন্য প্রথমে নিজে রিলাক্স থেকে বাবুকে ফিড করাতে পারেন। এসময় বই পড়তে পারেন বা গান শুনতে পারেন। কিছু সময় পরপর পজিশন বদলাতে পারেন। বাবুকে ৩০ ডিগ্রি পজিশন এ শুইয়ে নিজেও শুয়ে খাওয়াতে পারেন কিছু সময়। সবচেয়ে বড় কথা টেনশন বাদ দিয়ে রিল্যাক্স থেকে ফিডিং এনশিওর করা।
-কেয়ারগিভাররা ব্রেস্টফিড করানো মায়ের কাছে পানি, খাবার দাবার দিতে পারেন।যাতে লম্বা সময় নার্সিং এ মায়ের অসুবিধা না হয়।
  • বাবু অতিরিক্ত কান্না করলে ,অস্থির হয়ে থাকলে তাকে শান্ত করার চেষ্টা করুন। নার্সিং এর সময় ঘুমপাড়ানি গান,হালকা দুলুনি, নিভু নিভু আলো, আরামদায়ক রুম টেম্পারেচার বাচ্চাকে শান্ত করতে সাহায্য করে।
  • দুশ্চিন্তায় পড়ে ফর্মূলা মিল্ক না দিয়ে ব্রেস্ট মিল্ক পাম্প করে সেটাই ফিডারে দিতে পারেন। তবে এক্সক্লুসিভ ব্রেস্টফিডিং বাবুর জন্য বেশী ভালো।
  • প্রতি মাসে বাবুর উচ্চতা এবং ওজন মেপে খেয়াল রাখুন তার বয়স অনুযায়ী ওজন এবং উচ্চতা ঠিক আছে কিনা। ডাক্তার রা বলেন ৬ মাসে জন্মের সময়ের ওজন এর ডাবল হলেই ওজন ঠিক মত বাড়ছে। চিন্তার কোন কারণ নেই। দৈনিক ৬বার প্রসাব করলেই বুঝা যাবে বাচ্চা ঠিক মত দুধ পাচ্ছে।
আজ তাহলে এটুকুই। কারো কোন প্রশ্ন বা সাজেশন অবশ্যই কমেন্ট এ জানাবেন। আপনার কোন বন্ধুর যদি নিউবর্ন থাকে বা আসবে, তাদের ট্যাগ করতে পারেন, উপকার হবে তাঁদের।

লিখেছেন-

MBBS, MSc, PGT (Dermatology)

Dr Ishrat Nazneen Metee

Leave a Reply