বাচ্চার ডায়রিয়া ও কন্সটিপেশন

আলহামদুলিল্লাহ্‌, দেড় বছরে নো ডায়রিয়া নো কন্সটিপেশন। তবে আমি সেগুলোর জন্য সচেতনভাবে কিছু কাজ করে গিয়েছি/যাচ্ছি। সেটাই আজ লিখব।
১. বাচ্চাকে রোটা ভাইরাসের টিকা দিতে পারেন। আমি দেইনি, কারণ আমার বেবির যখন রোটার টিকা দেয়ার বয়স ছিল, তখন দেশে রোটাভাইরাসের টিকা স্টক আউট হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তিতে যখন রিস্টক হয়, অনেক বেশি দাম ছিল। তাই ইচ্ছা থাকলেও দেয়া হয়নি।
২. ফীডার বোতল জমিয়ে না রেখে সাথে সাথে ধুয়ে ফেলেছি। সাথে সাথে ধোয়া না গেলে কডমোর বোতল ক্লিনজার দিয়ে ভিজিয়ে রেখেছি (যেভাবে আমরা কাপড় ভিজিয়ে রাখি)। শেষ ধোয়া খাবার পানি দিয়ে দিতাম। সব কিছু ডীপ ক্লিন করা খুব জরুরী। মাসে ২/১ দিন গরম পানিতে সিদ্ধ করেছি বোতল এবং এক্সেসরিজ। আমি কোন স্টেরিলাইজার কিনিনি (সব সময় বাজেট এ চলার চেষ্টা করেছি)। দৈনিক স্টেরিলাইজ করার প্রয়োজন নেই, তবে সব কিছুই একটা বড় ঢাকনাওয়ালা বক্স এর ভিতরে রাখতাম যাতে ধুলা না পড়ে, মাছি না বসে। কডমোর এই ক্লিনজারটা একটা লাইফ সেভার। এস্টেরিয়াতে এখন স্টক এ এনেছি নিজে উপকার পেয়েছি বলে।
https://asteriabd.com/…/kodomo-bottle-accessories…/
৩. পাশাপাশি একটা ব্যাপার মেনশন না করলেই নয়, সেটা হল পানি। আমাদের এলাকায় বছরের কিছু সময় পানি দুর্গন্ধ যুক্ত এবং সবুজ রঙ এর আসে। এই কারণে আমি ফকিরাপুল পানির ট্যাংকির পাশের এরিয়া থেকে ডীপ টিউবয়েল এর পানি কার্ড করে কালেক্ট করি। ওই পানিটা একদম ফ্রেশ, তবু ফিল্টার করে ব্যবহার করি। অনেকের কমপ্লেইন দেখেছি পানির কারনে বাচ্চার বারবার পেটে অসুখ হয়।
৪. বাচ্চা কোন কিছু মুখে দেয়ার বয়স হলেই সব কিছু কডমোর ক্লিনজার দিয়ে ধুয়ে দিয়েছি। ছবির খেলনাটাও ধুয়ে দিয়েছি, যেহেতু সে মুখে দেয়।
৫. বাচ্চা যদি শুধু বুকের দুধ খায়, তবে ৬মাসের আগে বাচ্চা অনেক সময় ৭দিনে একবার পটি করে, এটা নরমাল। এতে প্যানিক করার কিছু নেই। বিশেষত ২মাস বয়সে বাচ্চাদের বাউয়েল খুব ইররেগুলার হয়। আর যদি ফর্মুলা খায়, তবে খেয়াল করে দেখবেন পার্টিকুলার ফর্মুলাতে তার কন্সটিপেশন হচ্ছে কিনা। সেক্ষেত্রে ফর্মুলা চেইঞ্জ করে দেখতে পারেন। তবু কন্সটিপেশন এর জন্য ঘরে বাচ্চাদের গ্লিসারিন সাপোজিটরি ডীপ ফ্রিজ এ রাখতে পারেন, যদি দেখেন বাচ্চা পটি করার চেষ্টা করেও পারছেনা এবং কষ্ট পাচ্ছে, তখন গ্লিসারিন সাপোজিটরি দিতে পারেন। ( এটা ওভার দ্যা কাউন্টার ড্রাগ, দিতে হলে ক্ষতি নেই)

৬. সলিড শুরু করার পর কিছু জিনিস আমি পার্টিকুলারলি মাথায় রেখেছি।

  • ভাতের চাইতে ওটস এ আয়রনের পরিমান বেশি এবং পেট নরম রাখে।
  • পোলাও চাল কন্সটিপেশন করে তাই আমি পোলাও চাল পারত পক্ষে দেইনাই।
  • আমাদের ট্যান্ডেন্সি হল বাচ্চাকে ৩/৪পদের ডাল, কয়েক পদের সবজি মিলিয়ে পোলাও চাল দিয়ে খিচুড়ি দেয়া। মুগ ডাল ৭ মাসে, মসুর ডাল ১০ মাসে দেয়ার নিয়ম। মাল্টিপল ডাল এ বাচ্চার গ্যাস/কন্সটিপেশন হয়।
  • সলিড শুরু করার সাথে সাথেই চেষ্টা করেছি শাক দেয়ার। প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে ৩-৪ দিন শাক একটু হলেও দিয়েছি।
  • ফলের রস দেইনাই। চামড়া সহ/ আশ সহ ফল দিয়েছি। খেজুর সিদ্ধ করে দিয়েছি। ফলের আশ/খোশা বাচ্চার পটি নরম রাখতে সাহায্য করে।
আজ আপাতত এটুকুই। কারো জিজ্ঞাস্য থাকলে কমেন্ট করতে পারেন। নেক্সট কি নিয়ে লিখব, সেটার ও আইডিয়া দিতে পারেন। ধন্যবাদ।

লিখেছেন-

MBBS, MSc, PGT (Dermatology)

Dr Ishrat Nazneen Metee